Page

Choose Your Language

Wednesday, June 29, 2016

আশ্চর্য-সুকুমার রায়।

আশ্চর্য
সুকুমার রায়

নিরীহ কলম, নিরীহ কালি,
নিরীহ কাগজে লিখিল গালি-
"বাঁদর বেকুব আজব হাঁদা
বকাট্‌ ফাজিল অকাট্‌ গাধা ।"
আবার লিখিল কলম ধরি
বচন মিষ্টি, যতন করি-
"শান্ত মানিক শিষ্ট সাধু
বাছারে ধনরে, লক্ষ্মী যাদু ।"
মনের কথাটি ছিল যে মনে,
রটিয়া উঠিল খাতার কোণে,
আঁচড়ে আঁকিতে আখর ক'টি
কেহ খুশি কেহ উঠিল চটি !
রকম রকম কালির টানে
কারো হাসি কারো অশ্রু আনে,
মারে না, ধরে না, হাঁকে না বুলি
লোকে হাসে কাঁদে কি দেখি ভুলি ?
সাদায় কালো কি খেলা জানে ?
ভাবিয়া ভাবিয়া না পাই মানে ।

Read more ...

আর্কিমিডিস-সুকুমার রায়।

আর্কিমিডিস
সুকুমার রায়


প্রায় বাইশ শত বৎসর আগে, গ্রীস সাম্রাজ্যের অধীন সাইরাকিউস নগরে আর্কিমিডিসের জন্ম হয়। আর্কিমিডিসের মতো অসাধারণ পণ্ডিত সেকালে গ্রীক জাতির মধ্যে আর দ্বিতীয় ত ছিলই না— সমস্ত পৃথিবীতে তাঁহার সমান কেহ ছিল কিনা সন্দেহ। দিন রাত তিনি আপনার পুঁথিপত্র লইয়া কি যে চিন্তায় ডুবিয়া থাকিতেন, আর অঙ্ক কষিয়া কত যে আশ্চর্য তত্ত্বের হিসাব করিতেন, লোকে তাহার কিছুই বুঝিত না— কেবল অবাক হইয়া দু-দশজন পণ্ডিত লোকে পরম আগ্রহে আদর করিয়া তাহার সংবাদ লইত, আর অবাক হইয়া বলিত, "পণ্ডিতের মতো পণ্ডিত যদি কেউ থাকে, তবে সে হচ্ছে আর্কিমিডিস।"

সাইরাকিউসের রাজা হীয়েরো ছিলেন আর্কিমিডিসের বন্ধু। তিনি কেবলই বলিতেন, "এত বড় পণ্ডিত হইয়া তোমার কি লাগ হইল, যদি লোকে তোমার কদর না বোঝে? তুমি কেবল বিজ্ঞানের বড় বড় তত্ত্ব আর সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম হিসাব নিয়া থাক; মানুষের কাজে লাগে এমন সব যন্ত্র করিয়া দেখাও— লোকে বুঝুক তুমি কত বড় পণ্ডিত!" বন্ধুর কথায় আর্কিমিডিস মাঝে মাঝে 'কোন জিনিস' গড়িবার দিকে মন দিতেন। তাহার ফলে নানারকম 'স্ক্রু', জল তুলিবার জন্য প্যাঁচাল 'পাম্প', জলে-চালান বাতাসে-চালান কতরকম যন্ত্র প্রভৃতি সৃষ্টি হইল। পাখা টানিবার জন্য দেয়ালে যে চাকার 'পুলি' খাটান থাকে, সেই পুলি জিনিসটাও আর্কিমিডিসের আবিষ্কার। বড় বড় মালপত্র বোঝাই হইয়া এত যে কলের গাড়ি আর এত যে জাহাজ পৃথিবীময় ছুটিয়া বেড়াইতেছে, আর বড় বড় কারখানায় এত যে ভারি ভারি কলকামান লোহা লক্কর লইয়া নাড়াচাড়া করিতেছে, সবখানেই দেখিবে মাল উঠানোর জন্য 'পুলি' না হইলে চলে না। মূর্খ লোকে যখন আর্কিমিডিসের কলকব্জার পরিচয় পাইল, তখন তাহারাও ভাবিতে লাগিল, 'লোকটা পণ্ডিত বটে।'

আর্কিমিডিসের জীবনের একটি গল্প তোমরা বোধহয় শুনিয়া থাকিবে। রাজা হীয়েরো এক সেকরার কাছে একটি সোনার মুকুট গড়াইতে দিয়াছিলেন। সেকরা মুকুটটি গড়িয়াছিল ভালই কিন্তু রাজার মনে সন্দেহ হইল যে, সে সোনা চুরি করিয়াছে এবং সেই চুরি ঢাকিবার জন্য মুকুটের মধ্যে খাদ মিশাইয়াছে। কোন সহজ উপায়ে এই চুরি ধরা যায় কিনা জানিবার জন্য বন্ধু আর্কিমিডিসকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। আর্কিমিডিস সব শুনিয়া বলিলেন, "একটু ভাবিয়া বলিব।" ভাবিতে ভাবিতে কয়েকদিন কাটিয়া গেল। একদিন স্নানের সময়ে কাপড় ছাড়িয়া সবে তিনি স্নানের টবে পা দিয়াছেন, এমন সময় খানিকটা জল উছলিয়া পড়ামাত্র, হঠাৎ সেই প্রশ্নের এক চমৎকার মীমাংসা তাঁহার মাথায় আসিল তখন কোথায় গেল স্নান! তিনি তৎক্ষণাৎ 'Eureka!' 'Eureka!' (পেয়েছি! পেয়েছি!) বলিয়া রাস্তায় ছুটিয়া বাহির হইলেন।

যে জিনিস পাইয়া তিনি আনন্দে এমন আত্মহারা হইয়াছিলেন, বিজ্ঞানে এখনও তাহাকে "আর্কিমিডিসের তত্ত্ব" বলা হয়। ভারি জিনিসকে জলে ছাড়িলে, তাহার 'ওজন' কমিয়া যায়; কি পরিমাণ কমিবে তারাও হিসাব করিয়া বলা যায়। কোন হালকা জিনিসকে জলে ভাসাইলে, তাহার খানিকটা ডোবে, খানিকটা ভাসিয়া থাকে। ঠিক কতখানি ডোবে তাহারও হিসাব আছে। আর্কিমিডিসের তত্ত্বে এই সকল কথারই আলোচনা করা হইয়াছে। আর্কিমিডিস রাজাকে বলিলেন, "ঐ মুকুটের ওজন যতখানি, ঠিক সেই ওজনের সোনা লইয়া একটা জলভরা পাত্রে পরীক্ষা করিতে হইবে। পাত্রের মধ্যে মুকুটটা ডুবাইয়া দিলে কতখানি জল উছলিয়া পড়ে, তাহা মাপিয়া দেখুন, তারপর আবার জল ভরিয়া সেই ওজনের একতাল সোনা ডুবাইয়া দেখুন কতটা জল পড়ে। মুকুট যদি খাঁটি সোনার হয়, তবে দুই বারেই ঠিক একই পরিমাণ জল বাহির হইবে। যদি খাদ মিশান থাকে, তবে মুকুটটা সেই ওজনের সোনার চাইতে আয়তনে কিছু বড় হইবে, সুতরাং তাহাতে বেশি জল ফেলিয়া দিবে।"

কোন কোন চশমার কাচ এমন থাকে যে, তাহাতে অনেকখানি সূর্যের আলোককে অল্প জায়গার মধ্যে ধরিরা আনা যায়। সেইরকম কাচ বেশ বড় করিয়া বানাইলে, তাহার মধ্যে রোদ ধরিয়া আগুন জ্বালান চলে। সরার মতো গর্তওয়ালা আরশি দিয়াও এই কাজটি করান যায়। আর্কিমিডিস এইরকম আরশিও বানাইয়াছিলেন। শোনা যায়, রোমের যুদ্ধ জাহাজ যখন সাইরাকিউস আক্রমণ করিতে আসে, তখন তিনি এইরকম আরশি দিয়া কড়া রোদ ফেলিয়া, তাহাতে আগুন ধরাইয়া দেন। কেবল তাহাই নয়, রোমীয় সেনাপতি মার্সেলাস যখন সৈন্য-সামন্ত লইয়া সাইরাকিউস আক্রমণ করিতে আসেন, তখন আর্কিমিডিস নগররক্ষার জন্য নানারকম অদ্ভুত নূতন নূতন যুদ্ধযন্ত্রের আয়োজন করিলেন। সে-সকল যন্ত্রের পরিচয় পাইয়া রোমীয় সৈন্য বহুদিন পর্যন্ত নগরের কাছে ঘেঁষিতে সাহস পায় নাই। তাহার পরে কত যুগ যুগ ধরিয়া, দেশে দেশে আর্কিমিডিসের অদ্ভুত কীর্তির কথা লোকের মুখে মুখে শোনা যাইত।

রোমীয় সৈন্যরা সে-সকল যুদ্ধেযন্ত্রের যে বর্ণনা দিয়াছে, তাহা পড়িলে বেশ বুঝা যায়, সেগুলি তাহাদের মনে কিরকম ভয়ের সঞ্চার করিয়াছিল। বড় বড় থামের মতো চুড়া হঠাৎ দেয়ালের উপর মাথা তুলিয়া, হুড়হুড় করিয়া শত্রুর উপর রাশি রাশি পাথর ছুঁড়িয়া মারে, আবার পর মুহূর্তেই দেয়ালের পিছনে ডুব মারে। বড় বড় কলের ধাক্কায় কড়ি বড়গা ছুটিয়া শত্রুর জাহাজে গিয়া পড়ে, দূর হইতে প্রকাণ্ড নখাল সাঁড়াশি চালাইয়া শত্রুর জাহাজ উপড়াইয়া আনে। এ সকল দেখিয়া রোমের সৈন্য আর রোমের জাহাজ নগর ছাড়িয়া দূরে হটিয়া গেল। মার্সেলাস বলিলেন, "যুদ্ধ করিয়া সাইরাকিউস দখল করা কাহারও সাধ্য নয়। তোমরা পথ ঘাট আটকাইয়া এইখানেই বসিয়া থাক। নগরের খাদ্য যখন ফুরাইবে, তখন আপনা হইতেই ইহারা হার মানিবে।" প্রায় তিন বৎসর বিনা যুদ্ধে রোমীয়েরা সাইরাকিউসের চারিদিক ঘেরিয়া রাখিল। তারপর নগরের লোকদের যখন না খাইয়া মারা যাইবার মতো অবস্থা হইল, তখন সাইরাকিউস দখল করা সহজ হইয়া আসিল। মার্সেলাস হুকুম দিলেন, "যাও, নগর লুট করিয়া আন। কিন্তু খবরদার, আর্কিমিডিসের কোন অনিষ্ট করিও না।"

আর্কিমিডিস তখন কি একটা হিসাব করিতেছেন, নগরে কোথায় কি ঘটিতেছে, তাঁহার হুঁশও নাই। কতগুলো অঙ্ক ও রেখা তাহারই চিন্তায় তিনি ডুবিয়া আছেন। রোমীয় সৈন্যেরা সেই ৭৫ বৎসরের বৃদ্ধকে আর্কিমিডিস বলিয়া চিনিতে পারিল না। তাহারা কোলাহল করিতে করিতে ঘরে ঢুকিয়া তাঁহার পরিচয় জিজ্ঞাসা করিল। কিন্তু তিনি তাঁহার চিন্তার মধ্যে এমনই তন্ময় হইয়াছিলেন যে, সে কথা তাঁহার কানেই গেল না। তিনি একবার খালি হাত তুলিয়া বলিলেন, "হিসাবে ব্যাঘাত দিও না।" মূর্খ সৈনিক তৎক্ষণাৎ তলোয়ারের আঘাতে তাঁহার মাথা কাটিয়া ফেলিল। তাঁহার জীবনের শেষ হিসাব আর সম্পূর্ণ হইল না— তাঁহারই রক্তধারায় সে হিসাব মুছিয়া ফেলিল! কি তত্ত্বের আলোচনায় তিনি এমন করিয়া তন্ময় হইয়াছিলেন, তাহা জানিবারও আর কোন উপায় নাই।

আর্কিমিডিসের মৃত্যুর সংবাদ শুনিয়া মার্সেলাসের দুঃখের আর সীমা রহিল না। তিনি পরম যত্নে আর্কিমিডিসের কবরের উপর অতি সুন্দর সমাধি নির্মাণ করাইয়া তাঁহার প্রতি সম্মান দেখাইছিলেন। তাহার পর দুই হাজার বৎসর চলিয়া গেল, মানুষের ইতিহাসে এই বিজ্ঞানবীর মহাপুরুষের নাম এখনও অমর হইয়া আছে।

Read more ...

আড়ি-সুকুমার রায়।

আড়ি
সুকুমার রায়

কিসে কিসে ভাব নেই ? ভক্ষক ও ভক্ষ্যে-
বাঘে ছাগে মিল হলে আর নেই রক্ষে ।
শেয়ালের সাড়া পেলে কুকুরেরা তৈরি,
সাপে আর নেউলে ত চিরকাল বৈরী !

আদা আর কাঁচকলা মেলে কোনদিন্‌ সে ?
কোকিলের ডাক শুনে কাক জ্বলে হিংসেয় ।
তেলে দেওয়া বেগুনের ঝগড়াটা দেখনি ?
ছ্যাঁক্‌ ছ্যাঁক্‌ রাগ যেন খেতে আসে এখনি ।
তার চেয়ে বেশি আড়ি আমি পারি কহিতে-
তোমাদের কারো কারো কেতাবের সহিতে ।

Read more ...

অর্ফিয়ুস-সুকুমার রায়।

অর্ফিয়ুস
সুকুমার রায়


অর্ফিয়ুস

নয়টি বোন ছিলেন, তাঁহারা ছন্দের দেবী। গানের ছন্দ, কবিতার ছন্দ, নৃত্যের ছন্দ, সঙ্গীতের ছন্দ—সকলরকম ছন্দকলায় তাঁহাদের সমান কেহই ছিল না। তাঁহাদেরই একজন, দেবরাজ জুপিটারের পুত্র আপোলোকে বিবাহ করেন।

আপোলো ছিলেন সৌন্দর্যের দেবতা, শিল্প ও সঙ্গীতের দেবতা। তিনি যখন বীণা বাজাইয়া গান করিতেন তখন দেবতারা পর্যন্ত অবাক হইয়া শুনিতেন।

এমন বাপ-মায়ের ছেলে অর্ফিয়ুস যে গান-বাজনায় অসাধারণ ওস্তাদ হইবেন, সে আর আশ্চর্য কি? অর্ফিয়ুসের গুণের কথা দেশ-বিদেশ রটিয়া গেল—স্বয়ং আপোলো খুশী হইয়া তাঁহাকে নিজের বীণাটি দিয়া ফেলিলেন। পাহাড়ে পর্বতে বনে জঙ্গলে অর্ফিয়ুস বীণা বাজাইয়া ফিরিতেন আর সমস্ত পৃথিবী স্তব্ধ হইয়া তাহা শুনিত। অর্ফিয়ুসের বীণার সুরে আকাশ যখন ভরিয়া উঠিত, তখন সুরের আনন্দে গাছে গাছে ফুল ফুটিত, সমুদ্রের কোলাহল থামিয়া যাইত, বনের পশু হিংসা ভুলিয়া অবাক হইয়া পড়িয়া থাকিত।

এই রকমে দেশে দেশে বীণা বাজাইয়া অর্ফিয়ুস ফিরিতেছেন এমন সময় একদিন ইউরিডিস নামে এক আশ্চর্য সুন্দরী মেয়ে তাঁহার বীণার সুরে মোহিত হইয়া দেখিতে আসিলেন, কে এমন সুন্দর বাজায়। ইউরিডিসকে দেখিবামাত্র অর্ফিয়ুসের মন প্রফুল্ল হইয়া উঠিল, তাঁহার আনন্দ বীণার ঝঙ্কারে ঝঙ্কারে আকাশকে মাতাইয়া তুলিল। তন্ময় হইয়া সঙ্গীত শুনিতে শুনিতে ইউরিডিসের মন একেবারে গলিয়া গেল। তারপর ইউরিডিসের সহিত অর্ফিয়ুসের বিবাহ হইল; মনের আনন্দে দুইজনে দেশ-দেশান্তরে বেড়াইতে চলিলেন।

কিন্তু এ আনন্দ তাঁহাদের বেশীদিন থাকিল না। একদিন মাঠের মধ্যে এক বিষাক্ত সাপ ইউরিডিসকে কামড়াইয়া দিল এবং সেই বিষেই ইউরিডিসের মৃত্যু হইল। অর্ফিয়ুস তখন শোকে পাগলের মত হইয়া পড়িলেন, তাঁহার বীণার তারে হাহাকার করিয়া করুণ সঙ্গীত বাজিয়া উঠিল। কি করিবেন, কোথায় যাইবেন, কিছুই ভাবিয়া না পাইয়া, ঘুরিতে ঘুরিতে অর্ফিয়ুস একেবারে অলিম্পাস্‌ পর্বতের উপর আসিয়া পড়িলেন। সেখানে দেবরাজ বজ্রধারী জুপিটার তাঁহার দুঃখের গানে ব্যথিত হইয়া বলিলেন, "যাও, পাতালপুরীতে প্রবেশ করিয়া যমরাজ প্লুটোর নিকট তোমার স্ত্রীর জন্য নূতন জীবন ভিক্ষা করিয়া আন। কিন্তু জানিও, এ বড় দুঃসাধ্য কাজ; প্রাণের মায়া যদি থাকে, তবে এমন কাজে যাইবার আগে চিন্তা করিয়া দেখ।"

অর্ফিয়ুস নির্ভয়ে বীণা বাজাইতে বাজাইতে পাতালের দিলে চলিলেন। পাতালপুরীর সিংহদ্বারে যমরাজের ত্রিমুণ্ড কুকুর দিনরাত পাহারা দেয়। অর্ফিয়ুসকে আসিতে দেখিয়া রাগে তাহার ছয় চক্ষু জ্বলিয়া উঠিল— তাহার মুখ দিয়া বিষাক্ত আগুন ফেনাইয়া পড়িতে লাগিল। কিন্তু অর্ফিয়ুসের বীণার সুর যেমন তাহার কানে আসিয়া লাগিল, অমনি সে শান্ত হইয়া শুইয়া পড়িল। অর্ফিয়ুস অবাধে পাতালপুরীতে প্রবেশ করিলেন।

তখন পাতালপুরী কম্পিত করিয়া বীণার ঝঙ্কার বাজিয়া উঠিল। নরকের অন্ধকার ভেদ করিয়া সে সঙ্গীত পাতালের অতল গুহায় প্রবেশ করিল। সে শব্দে যমদূতের হুঙ্কার আর পাপীদের চিৎকার মুহূর্তের মধ্যে থামিয়া গেল। জলের মধ্যে আকণ্ঠ ডুবিয়া অত্যাচারী ট্যান্টেলাস পিপাসায় পাগল,—পান করিতে গেলেই জল সরিয়া যায়! বীণার সঙ্গীতে সে তাহার তৃষ্ণা ভুলিয়া গেল। মহাপাপী ইক্সিয়ন নরকের ঘুরন্ত চক্রে ঘুরিতে ঘুরিতে এতদিন পরে বিশ্রাম পাইল, ঘুরন্ত চক্র স্তব্ধ হইয়া রহিল। ধূর্ত নিষ্ঠুর সিসিফাস্‌ চিরকাল ধরিয়া পাহাড়ের উপর পাথর গড়াইয়া তুলিতেছে, যতবার তোলে ততবার পাথর গড়াইয়া পড়ে; সেও দারুণ শ্রমের দুঃখ ভুলিয়া সেই সঙ্গীত শুনিতে লাগিল।

অর্ফিয়ুস যমরাজের সিংহাসনের সম্মুখে গিয়া দাঁড়াইলেন। যমরাজ প্লুটো ও রানী প্রসেরপিনা গম্ভীর হইয়া বসিয়া আছেন; তাঁহাদের পায়ের কাছে নিয়তিরা তিন বোনে জীবনের সূতা লইয়া খেলিতেছে। একজন সূতা টানিয়া ছাড়াইতেছে, একজন সেই সূতা পাকাইয়া জড়াইতেছে, আর একজন কাঁচি দিয়া পাকান সূতা ছাঁটিয়া ফেলিতেছে। অর্ফিয়ুসের সঙ্গীতে যমরাজ সন্তুষ্ট হইলেন, নিয়তিরা প্রসন্ন হইল। তখন আদেশ হইল, "ইউরিডিসকে ফিরাইয়া দাও, সে পৃথিবীতে ফিরিয়া যাক। কিন্তু সাবধান অর্ফিয়ুস! যমপুরীর সীমানা পার হইবার পূর্বে ইউরিডিসের দিকে ফিরিয়া চাহিও না—তবে কিন্তু সকলই পণ্ড হইবে।"

অর্ফিয়ুস মনের আনন্দে বীণা বাজাইয়া চলিলেন, তাঁহার পিছন পিছন ইউরিডিসও চলিলেন। যমপুরীর সীমানায় আসিয়া অর্ফিয়ুস মনের আনন্দে নিষেধের কথা ভুলিয়া ফিরিয়া তাকাইলেন। অমনি তাঁহার চোখের সম্মুখেই ইউরিডিসের অপূর্বসুন্দর মূর্তি বিদায়ের ম্লান হাসি হাসিয়া শূন্যের মধ্যে মিলাইয়া গেল।

তারপরে অর্ফিয়ুস আর কি করিবেন? তিনি বনে জঙ্গলে পাহাড়ে পাগলের মত সন্ধান করিতে লাগলেন। তাঁহার মনে হইল, বনের আড়ালে আড়ালে, পর্বতের গুহায় গুহায় ইউরিডিস লুকাইয়া আছেন। মনে হইল, গাছের পাতায় পাতায় বাতাসের নিশ্বাস বলিতেছে, "ইউরিডিস, ইউরিডিস—" পাখিরা শাখায় শাখায় করুণ সুরে গান করিতেছে "ইউরিডিস, ইউরিডিস!"

এমনিভাবে অস্থিরমনে যখন তিনি ঘুরিতেছেন, তখন একদিন মদের দেবতা ব্যাকাসের সঙ্গীরা তাঁহাকে ধরিয়া বলিল, "তুমি স্ফূর্তি করিয়া বীণা বাজাও, আমরা নাচিব।" কিন্তু অর্ফিয়ুসের মনে সে স্ফূর্তি নাই, তাই বীণার তারেও কেবল দুঃখের সুরই বাজিতে লাগিল। তখন মাতালেরা রাগিয়া বলিল, "মার ইহাকে—এ আমাদের আমোদ মাটি করিতেছে।" তখন সকলে মিলিয়া অর্ফিয়ুস্‌কে মারিয়া তাহার দেহ নদীতে ভাসাইয়া দিল। সেই দেহ ইউরিডিসের নাম উচ্চারণ করিতে করিতে ভাসিয়া চলিল। শূন্যে অর্ফিয়ুসের আনন্দধ্বনি শুনিয়া সকলে বুঝিতে পারিল আবার তিনি ইউরিডিসকে ফিরিয়া পাইয়াছেন।

জলে স্থলে নদীর কলস্রোতে ঝরণার ঝর্ঝর শব্দে আনন্দ-কোলাহল বাজিয়া উঠিল।

Read more ...

আলিপুরের বাগানে-সুকুমার রায়।


আলিপুরের বাগানে
সুকুমার রায়


আলিপুরের বাগানে

আলিপুরের চিড়িয়াখানায় আমাদের একটি বন্ধু আছেন। আমরা যখনই আলিপুর যাই, অন্তত একটিবার তাঁর সঙ্গে দেখা করতে ভুলি না। দেখা করবার সময় শুধু হাতে যাওয়াটা ভাল নয়, তাই বন্ধুর জন্য প্রায়ই কিছু উপহার নিয়ে যাই। তিনিও তাঁর সাধ্যমত নানারকম তামাসা কসরত ও মুখভঙ্গী দেখিয়ে আমাদের আপ্যায়িত করেন।

অনেকে চিড়িয়াখানায় গিয়ে গোড়া থেকেই বাঘের ঘরটা দেখবার জন্য ব্যস্ত হন। সাপ, কুমির, উটপাখি, গন্ডার আর হিপোপটেমাস—কেউ কেউ এঁদেরও খুব খাতির করে থাকেন। কিন্তু যে যাই বল, বাগানে ঢুকতে না ঢুকতেই আমাদের মনটা সকলের আগে বলতে থাকে, বন্ধুর বাড়ি চল্‌, বন্ধুর বাড়ি চল্‌। বন্ধুর সঙ্গে কেন যে আমাদের এত ভাব, তা যদি শুনতে চাও, তাহলে তাঁর নামের পরিচয়, গুণের পরিচয়, বিদ্যার পরিচয়, সব তোমাদের শুনতে হয়।

বন্ধুটির নাম হচ্ছে শ্রীযুক্ত ওরাংচন্দ্র ওটান। আফ্রিকা নিবাসী, আলিপুর প্রবাসী। অমন অমায়িক চেহারা, অমন ঢিলাঢালা প্রশান্ত স্বভাব, অমন ধীর গম্ভীর মেজাজী চাল, সমস্ত আলিপুর খুঁজে আর কোথাও দেখবে না।

কত যে ভাবনা আর কত যে হিসাবপত্র সর্বদা তাঁর মাথার মধ্যে হেঁটে বেড়াচ্ছে, তাঁর ঐ প্রকাণ্ড কপালজোড়া হিজিবিজি রেখাগুলো দেখলেই তা বুঝতে পারবে। যখন তিনি চিৎপাত হয়ে শুয়ে, মুখের মধ্যে আঙুল দিয়ে, পেট চুলকাতে থাকেন, আর তাঁর কালো কালো হ্যাংলা মতন চোখ-দুটি মিট্‌মিট্‌ করে তাকিয়ে থাকে, তখন যদি তাঁর মনের মধ্যে কান পেতে শুনতে পারতে, তাহলে শুনতে সেখানে অনর্গল হিসাব চলছে—'আর চারটে কলা, আর দু ঠোঙা বাদাম, আর কতগুলো বিস্কুট, আর ঐ নাম-জানি-না গোল-গোল-মতন অনেকখানি'—ইত্যাদি। যখন তিনি খাঁচার ছাত থেকে গরাদ ধরে অত্যন্ত ভালমানুষের মতো ঝুলতে থাকেন, আর দুলতে থাকেন—যেন সংসারের কোন কিছুতে তাঁর মন নেই—তখন যদি তাঁর মনের কথা শুনতে, তাহলে শুনতে পেতে, তিনি কেবলই ভাবছেন, কেবলই ভাবছেন 'এই লোকটার পাগড়ি না হয় ঐ লোকটার চাদর, না হয় এই সাহেবটার টুপি, না হয় ঐ বাবুটার ছাতা—নেবই নেব, নেবই নেব।'

একদিন আমরা চিড়িয়াখানায় গিয়ে দেখি, ওরাংবাবু দোলনা বেঁধে দোল খাচ্ছেন। কোত্থেকে কি করে, কার একটা পাগড়ি তিনি আদায় করেছেন, আর সেইটাকে ছাতের গরাদের উপর থেকে ঝুলিয়ে অপূর্ব দোলনা তৈরি হয়েছে। তিনি দুহাতে তার দুই মাথায় ধরে মনের আনন্দে দুলছেন। তাঁর মুখখানা যেন সদানন্দ শিশুর মতো, নিজের বাহাদুরি দেখে নিজেই অবাক।

হঠাৎ তাঁর কি খেয়াল হল, পাগড়ির একটা দিক ছেড়ে দিয়ে তিনি গেলেন মাথা চুলকোতে। অমনি পাগড়ির একটা মাথা ভারি হয়ে নেমে পড়ল, আর আরেক মাথা আলগা পেয়ে সুড়ুৎ করে গরাদের উপর দিয়ে পিছলে বেরিয়ে এল। ব্যাপারখানা বুঝবার আগেই ওরাংবাবু মেঝের উপর চিৎপাত। আর কেউ হলে অপ্রস্তুত হত, কিন্তু বন্ধু আমাদের অপ্রস্তুত হবার পাত্রই নন। তিনি পড়েই একটা ডিগবাজি খেয়ে উঠলেন আর এমনভাবে ফিরে দাঁড়ালেন যেন আগাগোড়া তিনি ইচ্ছা করেই আমাদের তামাসা দেখাচ্ছিলেন। তারপর অনেকখানি ভেবে আর অনেক বুদ্ধি খরচ করে আবার তিনি দোলনা খাটালেন। কাপাড়টাকে গরাদের উপর দিয়ে গলিয়ে তার দুটো মাথাকেই যে ধরে রাখতে হয়, এটা বুঝতে তাঁর কিছুক্ষণ সময় লেগেছিল। তিনি পাগড়িটাকে ঝুলিয়ে এক মাথা ধরে টানেন, আর হুস্‌ করে দোলনা খুলে আসে, তাতে প্রথমটা বেচারার ভারি ভাবনা হয়েছিল।

আমাদের বন্ধুটির নানারকম বিদ্যা আছে। তিনি পান খেতে ভারি ভালোবাসেন। পানটা হাতে দিলে, আগে সেটাকে খুলে পরীক্ষা করে দেখেন, তারপর হাতের মুঠোর মধ্যে মুড়ে টপ্‌ করে মুখের মধ্যে দিয়ে ফেলেন। যখন পান খেয়ে তাঁর মুখখানা লাল হয়, আর গাল বেয়ে পানের রস পড়তে থাকে, তখন তিনি মাটির মধ্যে থুতু ফেলেন, আর লাল রঙের থুতু দেখে খুশী হয়ে তাকিয়ে থাকেন। একদিন গিয়ে দেখি, তিন জবাফুলের মালা গলায় দিয়ে অত্যন্ত লাজুক ছেলের মতো চুপচাপ করে বসে আছেন। আমাদের দেখে তাঁর কি খেয়াল হল জানি না, তিনি ফুলগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেয়ে ফেললেন। শুনেছি, তিনি নাকি লুকিয়ে সিগারেট খেতেও শিখেছেন, আর সুযোগ পেলে মালীদের হুঁকোতেও দু-এক টান দিতে ছাড়েন না।

বন্ধু গানবাজনার সমজদার কিনা, অথবা 'সন্দেশ' পড়তে পারেন কিনা সেটা পরীক্ষা করে দেখবার সুযোগ পাইনি, কিন্তু তিনি যে সুগন্ধ জিনিসের কদর বোঝেন, তার পরিচয় অনেক পেয়েছি। তুলোয় করে খানিকটা এসেন্স দিয়ে দেখেছি, সেই তুলোটুকু নাকে ঠেকিয়ে শুঁকতে শুঁকতে আরামে তাঁর দুই চোখ বুজে আসে, জোরে জোরে নিশ্বাস টানতে টানতে, তিনি চিৎপাত হয়ে শুয়ে পড়েন। অনেকক্ষণ শুঁকে শুঁকে তারপর তুলোটাকে যত্ন করে তুলে রেখে দেন, আর থেকে থেকে ফিরে এসে তার গন্ধ শোঁকেন। একবার আমরা তামাসা দেখবার জন্য তুলোয় করে খানিকটা ঝাঁঝালো অ্যামোনিয়া দিয়েছিলাম। সেটাকে শুঁকে যেরকম অদ্ভুত চোখমুখের ভঙ্গী তিনি করেছিলেন, আর যেরকম করে বারবার হাতে আর রেলিঙে নাক ঘষেছিলেন, সে কথা মনে হলে আজও আমাদের হাসি পায়। একবার শুঁকে, আর দু-চারবার চমৎকার মুখভঙ্গি করে, তিনি সেটাকে তাঁর প্রতিবেশী এক বেবুনের ঘরের মধ্যে ফেলে দিলেন। সে হতভাগা বেবুনটাও, কথা নেই বার্তা নেই, তুলোটাকে নিয়েই ঝপ্‌ করে মুখে দিয়ে ফেলেছে। তারপর যদি তার দুরবস্থা দেখতে! অনেকক্ষণ পর্যন্ত নাক রগড়িয়ে হাঁচতে হাঁচতে, আর হাঁ করে জিভের জল ফেলতে ফেলতে বেচারা অস্থির।

এই বেবুনটার সঙ্গে ওরাং ওটানের একটুও ভাব নেই। আরেকবার ওরাং আমাদের কাছ থেকে একটা লাঠি আদায় করেছিলেন। লাঠিটা পেয়েই তিনি ব্যস্তভাবে বাইরে গিয়ে, রেলিঙের ফাঁক দিয়ে তাঁর প্রতিবেশীর ঘাড়ের উপর এক খোঁচা। তখন যদি বেবুনটার রাগ দেখতে! আমরা সেবার দুই খাঁচার মাঝখানে কলা গুঁজে দিয়ে, বেবুন আর ওরাঙের ঝগড়া দেখছিলাম। বোকা বেবুনটা যতক্ষণে আঁচড় কামড় আর কিল ঘুঁষি চালাতে থাকে, ততক্ষণে ওরাংবাবু গম্ভীরভাবে ঘাড় গুঁজে কলাটুকু বার করে নেন। কলাটি নিয়ে মুখে দিয়ে তারপরে তাঁর উল্লাস আর ভেংচি। বেবুনটা রাগে যতই পাগলের মতো হয়ে উঠতে থাকে, বন্ধুর ততই ফুর্তি বাড়ে।

এসব কথা কিন্তু চুপিচুপি খালি তোমাদের কাছেই বললাম। তোমরা আলিপুরের কর্তাদের কাছে কক্ষনো এসব বল না; তাহলে আমাদের বাগানে যাওয়া মুশকিল হবে।

Read more ...

Tuesday, June 28, 2016

আজব সাজা-সুকুমার রায়।


আজব সাজা
সুকুমার রায়


"পণ্ডিতমশাই, ভোলা আমায় ভ্যাংচাচ্ছে।" "না পণ্ডিতমশাই, আমি কান চুলকাচ্ছিলাম, তাই মুখ বাঁকা দেখাচ্ছিল !" পণ্ডিতমশাই চোখ না খুলিয়াই অত্যন্ত নিশ্চিন্ত ভাবে বলিলেন, "আঃ ! কেবল বাঁদরামি ! দাঁড়িয়ে থাক।" আধমিনিট পর্যন্ত সব চুপচাপ। তারপর আবার শোনা গেল, "দাঁড়াচ্ছিস না যে ?" "আমি দাঁড়াব কেন ?" "তোকেই তো দাঁড়াতে হবে।" "যাঃ আমায় বলেছে না আর কিছু ! গণশাকে জিগ্‌‌গেস কর ? কিরে গণশা, ওকে দাঁড়াতে বলেছে না ?" গণেশের বুদ্ধি কিছুটা মোটা, সে আস্তে আস্তে উঠিয়া গিয়া পণ্ডিতমশাইকে ডাকিতে লাগিল, "পণ্ডিতমশাই ! ও পণ্ডিতমশাই !"

পণ্ডিতমশাই বিরক্ত হ‌‌ইয়া বলিলেন, "কি বলছিস বল্‌‌ না।" গণেশচন্দ্র অত্যন্ত ব্যাকুলভাবে জিজ্ঞাসা করিল, "কাকে দাঁড়াতে বলেছেন, পণ্ডিতমশাই ?" পণ্ডিতমশাই কট্‌‌মটে চোখ মেলিয়াই সাংঘাতিক ধমক দিয়া বলিলেন, "তোকে বলেছি, দাঁড়া।" বলিয়াই আবার চোখ বুজিলেন।

গণেশচন্দ্র দাঁড়াইয়া রহিল। আবার মিনিটখানেক সব চুপচাপ। হঠাৎ‌ ভোলা বলিল, "ওকে এক পায়ে দাঁড়াতে বলেছিল না ভাই ?" গণেশ বলিল, "কক্ষনো না, খালি দাঁড়াতে বলেছে।" বিশু বলিল, "এক আঙুল তুলে দেখিয়েছিল, তার মানেই এক পায়ে দাঁড়া।" পণ্ডিতমশাই যে ধমক দিবার সময় তর্জনী তুলিয়াছিলেন, এ কথা গণেশ অস্বীকার করিতে পারিল না। বিশু আর ভোলা জেদ করিতে লাগিল, "শিগগির এক পায়ে দাঁড়া বলছি, তা না হলে এক্ষুণি বলে দিচ্ছি।"

গণেশ বেচারা ভয়ে ভয়ে তাড়াতাড়ি এক পা তুলিয়া দাঁড়াইয়া রহিল। অমনি ভোলা আর বিশুর মধ্যে তুমুল তর্ক বাঁধিয়া গেল। এ বলে ডান পায়ে দাঁড়ানো উচিত, ও বলে, না, আগে বাঁ পা। গণেশ বেচারার মহা মুশকিল ! সে আবার পণ্ডিতমশাইকে জিজ্ঞাসা করিতে গেল, "পণ্ডিতমশাই, কোন্‌‌ পা ?"

পণ্ডিতমশাই তখন কি যেন একটা স্বপ্ন দেখিয়া অবাক হ‌‌ইয়া নাক ডাকাইতেছিলেন। গণেশের ডাকে হঠাৎ‌ তন্দ্রা ছুটিয়া যাওয়ায় তিনি সাংঘাতিক রকম বিষম খাইয়া ফেলিলেন। গণেশ বেচারা তার প্রশ্নের এ রকম জবাব একেবারেই কল্পনা করে নাই, সে ভয় পাইয়া বলিল, "ঐ যা কি হবে ?" ভোলা বলিল, "দৌড়ে জল নিয়ে আয়।" বিশু বলিল, "শিগ্‌‌গির মাথায় জল দে।" গণেশ এক দৌড়ে কোথা হ‌‌ইতে একটা কুঁজা আনিয়া ঢক্‌‌ঢক্‌‌ করিয়া পণ্ডিতমশায়ের টাকের উপর জল ঢালিতে লাগিল। পণ্ডিতমশায়ের বিষম খাওয়া খুব চট্‌‌পট্‌‌ থামিয়া গেল, কিন্তু তাঁহার মুখ দেখিয়া গণেশের হাতে জলের কুঁজা ঠক্‌‌ঠক্‌‌ করিয়া কাঁপিতে লাগিল।

ভয়ে সকলেই খুব গম্ভীর হ‌‌ইয়া রহিল, খালি শ্যামলাল বেচারার মুখটাই কেমন যেন আহ্লাদি গোছের হাসি হাসি মতো, সে কিছুতেই গম্ভীর হ‌‌ইতে পারিল না। পণ্ডিতমশায়ের রাগ হঠাৎ‌ তার উপরেই ঠিক্‌‌রাইয়া পড়িল। তিনি বাঘের মতো গুম্‌‌গুমে গলায় বলিলেন, "উঠে আয় !" শ্যামলাল ভয়ে কাঁদ কাঁদ হ‌‌ইয়া বলিল, "আমি কি করলাম? গণশা জল ঢাল্‌‌ল, তা আমার দোষ কি?" পণ্ডিতমশাই মানুষ ভালো, তিনি শ্যামলালকে ছাড়িয়া গণ্‌‌শার দিকে তাকাইয়া দেখেন তাহার হাতে তখনও জলের কুঁজা। গণেশ কোনো প্রশ্নের অপেক্ষা না করিয়াই বলিয়া ফেলিল, "ভোলা আমাকে বলেছিল।" ভোলা বলিল, "আমি তো খালি জল আনতে বলেছিলম। বিশু বলেছিল, মাথায় ঢেলে দে।" বিশু বলিল, "আমি কি পণ্ডিতমশায়ের মাথায় দিতে বলেছি? ওর নিজের মাথায় দেওয়া উচিত ছিল, তাহলে বুদ্ধিটা ঠাণ্ডা হত।"

পণ্ডিতমশাই খানিকক্ষণ কটমট করিয়া সকলের দিকে তাকাইয়া তারপর বলিলেন, "যা ! তোরা ছেলেমানুষ তাই কিছু বললাম না। খবরদার আর অমন করিসনে।" সকলে হাঁফ ছাড়িয়া বাঁচিল, কিন্তু পণ্ডিতমশাই কেন যে হঠাৎ‌ নরম হ‌‌ইয়া গেলেন কেহ তাহা বুঝিল না। পণ্ডিতমশায়ের মনে হঠাৎ‌ যে তাঁর নিজের ছেলেবেলার কোন দুষ্টুমির কথা মনে পড়িয়া গেল, তাহা কেবল তিনি‌‌ই জানেন।

Read more ...

আজব খেলা-সুকুমার রায়।

আজব খেলা
সুকুমার রায়


সোনার মেঘে আল্‌তা ঢেলে সিঁদুর মেখে গায়
সকাল সাঁঝে সূর্যি মামা নিত্যি আসে যায় ।
নিত্যি খেলে রঙের খেলা আকাশ ভ'রে ভ'রে
আপন ছবি আপনি মুছে আঁকে নূতন ক'রে ।
ভোরের ছবি মিলিয়ে দিল দিনের আল জ্বেলে
সাঁঝের আঁকা রঙিন ছবি রাতের কালি ঢেলে ।
আবার আঁকে আবার মোছে দিনের পরে দিন
আপন সাথে আপন খেলা চলে বিরামহীন ।
ফুরায় নাকি সোনার খেলা ? রঙের নাহি পার ?
কেউ কি জানে কাহার সাথে এমন খেলা তার ?
সেই খেলা, যে ধরার বুকে আলোর গানে গানে
উঠ্‌ছে জেগে- সেই কথা কি সুর্যিমামা জানে ?

Read more ...

আহ্লাদী-সুকুমার রায়।

আহ্লাদী
সুকুমার রায়

হাসছি মোরা হাসছি দেখ, হাসছি মোরা আহ্লাদী,
তিনজনেতে জট্‌লা ক'রে ফোক্‌লা হাসির পাল্লা দি ।
হাসতে হাসতে আসছে দাদা, হাসছি আমি, হাসছে ভাই,
হাসছি কেন কেউ জানে না, পাচ্ছে হাসি হাসছি তাই ।
ভাবছি মনে, হাসছি কেন ? থাকব হাসি ত্যাগ ক'রে,
ভাবতে গিয়ে ফিকফিকিয়ে ফেল্‌ছি হাসি ফ্যাক্‌ ক'রে ।
পাচ্ছে হাসি চাপতে গিয়ে, পাচ্ছে হাসি চোখ বুজে,
পাচ্ছে হাসি চিম্‌টি কেটে নাকের ভিতর নোখ্‌ গুঁজে ।
হাসছি দেখে চাঁদের কলা জোলার মাকু জেলের দাঁড়
নৌকা ফানুস পিঁপড়ে মানুষ রেলের গাড়ী তেলের ভাঁড় ।
পড়তে গিয়ে ফেলছি হেসে 'ক খ গ' আর শ্লেট দেখে-
উঠ্‌ছে হাসি ভস্‌ভসিয়ে সোডার মতন পেট থেকে ।
Read more ...

আদুরে পুতুল-সুকুমার রায়।

আদুরে পুতুল
সুকুমার রায়


আদুরে পুতুল
যাদুরে আমার আদুরে গোপাল, নাকটি নাদুস থোপ্‌না গাল,
ঝিকিমিকি চোখ মিট্‌মিটি চায়, ঠোঁট দুটি তায় টাট্‌কা লাল ।
মোমের পুতুল ঘুমিয়ে থাকুক্‌ দাঁত মেলে আর চুল খুলে-
টিনের পুতুল চীনের পুতুল কেউ কি এমন তুলতুলে ?
গোব্‌দা গড়ন এমনি ধরন আব্‌দারে কেউ ঠোঁট ফুলোয় ?
মখমলি রং মিষ্টি নরম- দেখ্‌ছ কেমন হাত বুলোয় !
বল্‌বি কি বল্‌ হাব্‌লা পাগল আবোল তাবোল কান ঘেঁষে,
ফোক্‌লা গদাই যা বলবি তাই ছাপিয়ে পাঠাই "সন্দেশে"

Read more ...

অবুঝ-সুকুমার রায়।


অবুঝ
সুকুমার রায়

চুপ করে থাক্‌, তর্ক করার বদ্‌অভ্যাসটি ভাল না,
এক্কেবারেই হয় না ওতে বুদ্ধিশক্তির চালনা ।
দেখ্‌ ত দেখি আজও আমার মনের তেজটি নেভেনি-
এইবার শোন্‌ বলছি এখন- কি বলছিলেম ভেবেনি !
 বলছিলেম কি, আমি একটা বই লিখেছি কবিতার,
উঁচু রকম পদ্যে লেখা আগাগোড়াই সবি তার ।
তাইতে আছে "দশমুখে চায়, হজম করে দশোদর,
শ্মশানঘাটে শষ্পানি খায় শশব্যস্ত শশধর ।"
এই কথাটার অর্থ যে কি, ভাবছে না কেউ মোটেও-
বুঝছে না কেউ লাভ হবে কি, অর্থ যদি জোটেও ।
এরই মধ্যে হাই তুলিস্‌ যে ? পুঁতে ফেল্‌ব এখনি,
ঘুঘু দেখেই নাচতে শুরু, ফাঁদ ত বাবা দেখনি !
কি বললি তুই ? সাতান্নবার শুনেছিস্‌ ঐ কথাটা ?
এমন মিথ্যে কইতে পারিস্‌ লক্ষ্মীছাড়া বখাটা !
আমার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সাধ্যি নেই কো পেরোবার
হিসেব দেব, বলেছি এই চোদ্দবার কি তেরোবার ।
সাতান্ন তুই গুনতে পারিস্‌ ? মিথ্যেবাদি গুনে যা-
ও শ্যামাদাস ! পালাস্‌ কেন ? রাগ করিনি, শুনে যা ।

Read more ...

আবোল-তাবোল--সুকুমার রায়।


আবোল তাবোল
সুকুমার রায়

মেঘ মুলুকে ঝাপ্‌সা রাতে,
রামধনুকের আব্‌ছায়াতে,
তাল বেতালে খেয়াল সুরে,
তান ধরেছি কণ্ঠ পুরে ।
হেথায় নিষেধ নাই রে দাদা,
নাই রে বাঁধন নাইরে বাধা ।
হেথায় রঙিন্‌ আকাশ তলে,
স্বপন দোলা হাওয়ায় দোলে,
সুরের নেশায় ঝরনা ছোটে,
আকাশ কুসুম আপনি ফোটে,
রঙিয়ে আকাশ, রঙিয়ে মন
চমক জাগে ক্ষণে ক্ষণ !
আজকে দাদা যাবার আগে
বল্‌ব যা মোর চিত্তে লাগে-
নাই বা তাহার অর্থ হোক্‌
নাইবা বুঝুক বেবাক্‌ লোক ।
আপনাকে আজ আপন হতে
ভাসিয়ে দিলাম খেয়াল স্রোতে ।
ছুট্‌লে কথা থামায় কে ?
আজকে ঠেকায় আমায় কে ?
আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ্‌ তব্‌লা বাজে-
রাম-খটাখট্‌ ঘ্যাচাং ঘ্যাঁচ্‌
কথায় কাটে কথার প্যাঁচ্‌ ।
আলোয় ঢাকা অন্ধকার,
ঘণ্টা বাজে গন্ধে তার ।
গোপন প্রাণে স্বপন দূত,
মঞ্চে নাচেন পঞ্চ ভূত !
হ্যাংলা হাতি চ্যাং-দোলা,
শূন্যে তাদের ঠ্যাং তোলা ।
মক্ষি রাণী পক্ষীরাজ-
দস্যি ছেলে লক্ষী আজ ।
আদিম কালের চাঁদিম হিম
তোড়ায় বাঁধা ঘোড়ার ডিম ।
ঘনিয়ে এল ঘুমের ঘোর,
গানের পালা সাঙ্গ মোর ।
Read more ...

দাশুর কীর্তি-সুকুমার রায়।


দাশুর কীর্তি
সুকুমার রায়



শিশু সাহিত্যে সুকুমার রায়ের অবস্থান রাজার থেকে কিছু কম নয়। তিনি এমন একজন সাহিত্যিক যিনি সত্যিকারিই একজন শিশুর মতো করে ভাবতে পারতেন।বাংলা সাহিত্যে তাঁর আগে কেউ শিশুদের জগৎটিকে এত সুন্দর করে তুলে ধরতে পারেননি। দাশু চরিত্রটি সুকুমার রায়ের একটি অমর কীর্তি। এরকম একটা পাগলা বন্ধু এত বছর পরে আজও তুমি তোমার পাশে পেয়েই যাবে। দাশুর অদ্ভুতুরে কাজের গল্পের কোনো সীমা নেই। সেরকম একই গল্প দাশুর কীর্তি।নবীনচাঁদ ইস্কুলে এসেই বলল, কাল তাকে ডাকাতে ধরেছিল। শুনে স্কুল সুদ্ধ সবাই হাঁ হাঁ করে ছুটে এল। 'ডাকাতে ধরেছিল? বলিস কিরে!' ডাকাত না তো কি? বিকাল বেলায় সে জ্যোতিলালের বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল, সেখান থেকে ফিরবার সময় ডাকাতরা তাকে ধরে তার মাথায় চাঁটি মেরে, তার নতুন কেনা শখের পিরানটিতে কাদাজলের পিচ্‌কিরি দিয়ে গেল। আর যাবার সময় ব'লে গেল, "চুপ করে দাঁড়িয়ে থাক- নইলে দড়াম্‌ করে তোর মাথা উড়িয়ে দেব।" তাই সে ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে রাস্তার ধারে প্রায় বিশ মিনিট দাঁড়িয়েছিল, এমন সময় তার বড়মামা এসে তার কান ধরে বাড়িতে নিয়ে বললেন, "রাস্তায় সঙ্‌ সেজে ইয়ার্কি করা হচ্ছিল?" নবীনচাঁদ কাঁদ-কাঁদ গলায় ব'লে উঠল, "আমি কি করব? আমায় ডাকাতে ধরেছিল-" শুনে তার মামা প্রকাণ্ড এক চড় তুলে বললেন, "ফের জ্যাঠামি !" নবীনচাঁদ দেখল মামার সাথে তর্ক করা বৃথা- কারণ, সত্যি সত্যি তাকে ডাকাতে ধরেছিল, একথা তার বাড়ির কাউকে বিশ্বাস করানো শক্ত ! সুতরাং তার মনের দুঃখ এতক্ষণ মনের মধ্যেই চাপা ছিল।যাহোক ইস্কুলে এসে তার দুঃখ অনেকটা বোধ হয় দূর করতে পেরেছিল, কারণ স্কুলে অন্তত অর্ধেক ছেলে তার কথা শুনবার জন্য একেবারে ব্যস্ত হয়ে ঝুঁকে পড়েছিল, এবং তার প্রত্যেকটি ঘামাচি, ফুস্‌কুড়ি আর চুলকানির দাগটি পর্যন্ত তারা আগ্রহ করে ডাকাতির সুস্পষ্ট প্রমাণ ব'লে স্বীকার করেছিল। দু একজন যারা তার কনুয়ের আঁচড়টাকে পুরনো ব'লে সন্দেহ করেছিল, তারাও বলল যে হাঁটুর কাছে যে ছড়ে গেছে, সেটা একেবারে টাটকা নতুন। কিন্তু তার পায়ের গোড়ালিতে যে ঘায়ের মতো ছিল সেটাকে দেখে কেষ্টা যখন বললে, "ওটা তো জুতোর ফোস্কা", তখন নবীনচাঁদ ভয়ানক চটে বললে, "যাও, তোমাদের কাছে আর কিছুই বলব না।" কেষ্টাটার জন্য আমাদের আর কিছু শোনাই হল না।ততক্ষণে দশটা বেজে গেছে, ঢং ঢং করে ইস্কুলের ঘণ্টা পড়ে গেল। সবাই যে যার ক্লাশে চলে গেলাম, এমন সময় দেখি পাগলা দাশু একগাল হাসি নিয়ে ক্লাশে ঢুকছে। আমরা বললাম, "শুনেছিস? কাল নবুকে ডাকাতে ধরেছিল।" যেমন বলা অমনি দাশরথি হঠাৎ হাত পা ছুঁড়ে বই-টই ফেলে, খ্যাঃ-খ্যাঃ-খ্যাঃ-খ্যাঃ করে হাসতে হাসতে একেবারে মেঝের উপর বসে পড়ল। পেটে হাত দিয়ে গড়াগড়ি করে, একবার চিৎ হয়ে, একবার উপুড় হয়ে, তার হাসি আর কিছুতেই থামে না।দেখে আমরা তো অবাক! পণ্ডিত মশাই ক্লাশে এসেছেন, তখনও পুরোদমে তার হাসি চলছে। সবাই ভাবলে, 'ছোঁড়াটা ক্ষেপে গেল না কি?' যাহোক, খুব খানিকটা হুটোপাটির পর সে ঠাণ্ডা হয়ে, বই-টই গুটিয়ে বেঞ্চের উপর উঠে বসল। পণ্ডিত মশাই বললেন, "ওরকম হাসছিলে কেন?" দাশু নবীনকে দেখিয়ে বললে, "ঐ ওকে দেখে।" পণ্ডিত মশাই খুব কড়া ধমক লাগিয়ে তাকে ক্লাশের কোনায় দাঁড় করিয়ে রাখলেন। কিন্তু পাগলার তাতেও লজ্জা নেই, সে সারাটি ঘণ্টা থেকে থেকে বই দিয়ে মুখ আড়াল করে ফিক্‌ফিক্‌ করে হাসতে লাগল।টিফিনের ছুটির সময় নবু দাশুকে চেপে ধরল, "কিরে দেশো! বড় যে হাসতে শিখেছিস!" দাশু বললে, "হাসব না? তুমি কাল ধুনচি মাথায় দিয়ে কি রকম নাচটা নেচেছিলে, সে তো আর তুমি নিজে দেখো নি? দেখলে বুঝতে কেমন মজা!" আমরা সবাই বললাম, "সে কি রকম? ধুনচি মাথায় নাচছিল মানে?" দাশু বললে, "তাও জানো না? ঐ কেষ্টা আর জগাই- ঐ যা! বলতে না বারণ করেছিল !" আমি বিরক্ত হয়ে বললাম, "কি বলছিস ভালো করেই বল্‌ না।" দাশু বললে, "কালকে শেঠেদের বাগানের পিছন দিয়ে নবু একলা একলা বাড়ি যাচ্ছিল, এমন সময় দুটো ছেলে— তাদের নাম বলা বারণ— তারা দৌড়ে এসে নবুর মাথায় ধুনচির মত কি একটা চাপিয়ে, তার গায়ের উপর আচ্ছা করে পিচ্‌কিরি দিয়ে পালিয়ে গেল।" নবু ভয়ানক রেগে বলল, "তুই তখন কি করছিলি?" দাশু বললে, "তুমি তখন মাথার থলি খুলবার জন্য ব্যাঙের মত হাত পা ছুঁড়ে লাফাচ্ছিলে দেখে আমি বললাম— ফের নড়বি তো দড়াম করে মাথা উড়িয়ে দেব। শুনে তুমি রাস্তার মধ্যে কাঠ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলে, তাই আমি তোমার বড়মামাকে ডেকে আনলাম।" নবীনচাঁদ যেমন বাবুয়ানা, তেমনি তার দেমাক- সেইজন্য কেউ তাকে পছন্দ করত না, তার লাঞ্ছনার বর্ণনা শুনে সবাই বেশ খুশি হলাম। ব্রজলাল ছেলেমানুষ, সে ব্যাপারটা বুঝতে না পেরে বললে, "তবে যে নবীনদা বলছিল, তাকে ডাকাতে ধরেছে?" দাশু বললে, "দূর বোকা ! কেষ্টা কি ডাকাত?" বালতে না বলতেই কেষ্টা সেখানে হাজির। কেষ্টা আমাদের উপরের ক্লাশে পড়ে, তার গায়েও বেশ জোর আছে। নবীনচাঁদ তাকে দেখামাত্র শিকারী বেড়ালের মত ফুলে উঠল। কিন্তু মারামারি করতে সাহস পেল না, খানিকক্ষণ কট্‌মট্‌ করে তাকিয়ে সেখান থেকে সরে পড়ল। আমরা ভাবলাম গোলমাল মিটে গেল।কিন্তু তার পরদিন ছুটির সময় দেখি, নবীন তার দাদা মোহনচাঁদকে নিয়ে হন্‌হন্‌ করে আমাদের দিকে আসছে। মোহনচাঁদ ম্যাট্রিক ক্লাশে পড়ে, সে আমাদের চাইতে অনেক বড়, তাকে ওরকম ভাবে আসতে দেখেই আমরা বুঝলাম, এবার একটা কাণ্ড হবে। মোহন এসেই বলল, "কেষ্টা কই?" কেষ্টা দূর থেকে তাকে দেখেই কোথায় সরে পড়েছে, তাই তাকে আর পাওয়া গেল না। তখন নবীনচাঁদ বললে, "ওই দাশুটা সব জানে, ওকে জিজ্ঞাসা কর।" মোহন বললে, "কি হে ছোকরা, তুমি সব জানো নাকি?" দাশু বললে, "না, সব আর জানব কোত্থেকে- এইতো সবে ফোর্থ ক্লাশে পড়ি, একটু ইংরিজি জানি, ভূগোল বাংলা জিওমেট্রি—" মোহনচাঁদ ধমক দিয়ে বললে, "সেদিন নবুকে যে কারা সব ঠেঙিয়েছিল, তুমি তার কিছু জানো কিনা?" দাশু বললে, "ঠাঙায়নি তো- মেরেছিল, খুব অল্প মেরেছিল।" মোহন একটুখানি ভেংচিয়ে বললে, "খুব অল্প মেরেছে, না? তবু কতখানি শুনি?" দাশু বললে, "সে কিছুই না— ওরকম মারলে একটুও লাগে না।" মোহন আবার ব্যাঙ্গ করে বললে, "তাই নাকি? কি রকম মারলে পরে লাগে?" দাশু খানিকটা মাথা চুলকিয়ে তারপর বললে, "ঐ সেবার হেডমাস্টার মশাই তোমায় যেমন বেত মেরেছিলেন সেই রকম !" এ কথায় মোহন ভয়ানক চটে দাশুর কান ম'লে চিৎকার করে বলল, "দেখ্‌ বেয়াদপ ! ফের জ্যাঠামি করবি তো চাব্‌‌কিয়ে লাল করে দেব। কাল তুই সেখানে ছিলি কিনা, আর কি কি দেখছিলি খুলে বলবি কিনা?"জানোই তো দাশুর মেজাজ কেমন পাগলাটে গোছের, সে একটুখানি কানে হাত বুলিয়ে তারপর হঠাৎ মোহনচাঁদকে ভীষণভাবে আক্রমণ করে বসল। কিল, ঘুষি, চড়, আঁচড়, কামড় সে এমনি চটপট চালিয়ে গেল যে আমরা সবাই হাঁ করে তাকিয়ে রইলাম। মোহন বোধহয় স্বপ্নেও ভাবেনি যে, ফোর্থ ক্লাশের একটা রোগা ছেলে তাকে অমন ভাবে তেড়ে আসতে সাহস পাবে- তাই সে একেবারে থতমত খেয়ে কেমন যেন লড়তেই পারল না। দাশু তাকে পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে মাটিতে চিৎ করে ফেলে হাঁপাতে হাঁপাতে বলল, "এর চাইতেও ঢের আস্তে মেরেছিল।" ম্যাট্রিক ক্লাশের কয়েকটি ছেলে সেখানে দাড়িয়েছিল, তারা যদি মোহনকে সামলে না ফেলত, তাহলে সেদিন তার হাত থেকে দাশুকে বাঁচানোই মুশকিল হত।পরে একদিন কেষ্টাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, "হ্যাঁরে, নবুকে সেদিন তোরা অমন করলি কেন?" কেষ্টা বললে, "ঐ দাশুটাই তো শিখিয়েছিল ওরকম করতে। আর বলছিল, তা হলে একসের জিলিপি পাবি। আমরা বললাম, "কৈ আমাদের তো ভাগ দিলিনে?" কেষ্টা বলল, "সে কথা আর বলিস কেন? জিলিপি চাইতে গেলুম, হতভাগা বলে কিনা আমার কাছে কেন? ময়রার দোকানে যা, পয়সা ফেলে দে, যত চাস জিলিপি পাবি।আচ্ছা, দাশু কি সত্যি সত্যি পাগল, না কেবল মিচ্‌‌কেমি করে?
Read more ...

আলো দিয়ে আগুন জ্বালানে।




পৃথিবীর সকল শক্তির উৎস সূর্যালোক।
সূর্যের আলো ব্যাবহার করে আমরা নানান রকমের শক্তি পেতে পারি।
আজকে আমরা সেরকম একটি পরীক্ষা করে দেখবো যে,
আসলেই সূর্য থেকে অন্য শক্তি পাওয়া যায় কি না।
আমাদের পরীক্ষার অনুমান হচ্ছে,
সূর্যের শক্তি থেকে আমরা একটি কাগজে আগুন জ্বালাতে পারবো।
এই পরীক্ষাটি করতে আমাদের যা যা লাগবে—
১। পানি২। বক্রাকৃতিক পানির প্লাস্টিক বা কাঁচের বোতল
৩। সাদা কাগজ৪। কালো মার্কার
৫। কিছু দাহ্য পদার্থ।
যেমন- কাগজযেভাবে করবো—
১। সাদা কাগজের মাঝ বরাবর কালো মার্কার দিয়ে
একটা বৃত্ত বা চতুর্ভুজ আঁকবো এবং এর পরিসীমার ভিতরের অংশটি পুরো কালো রঙ করে দিবো
২। এবার বক্রাকৃতিক পানির বোতলটিতে পানি ভরে সব কিছু নিয়ে বাইরে সূর্যের আলোতে নিয়ে আসবো।
৩। সূর্যের আলো কাঁচের বোতলের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করলে
দেখা যাবে যে আলো দুইটা গাঢ় বৃত্ত তৈরি করেছে।
সেই বৃত্তটিকে কালো দাগের মধ্যে ফেলতে হবে।
এভাবে কিছুক্ষণ ধরে রাখলে কালো দাগ থেকে ধোয়া উঠা শুরু করবে। তখন অন্য দাহ্য পদার্থ এর মধ্যে নিয়ে রাখলে আসতে আস্তে আগুন জ্বলে উঠবে।
কেন এমন হলো—
এই পরীক্ষার বিজ্ঞানের অনেকগুলো সাধারণ মূলনীতির প্রয়োগ করা হয়েছে। যেমন পানির ভিতর দিয়ে বস্তুর আকৃতি বড় করা যায়। আমরা আগেও পানির ফোটাকে ম্যাগনিফায়িং গ্লাসের কাজে ব্যবহার করার পরীক্ষা করেছি। আবার বক্রাকৃতির বোতল উত্তল লেন্সের কাজ করে। ফলে আলো একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে কেন্দ্রীভূত হয়। তৃতীয় মূলনীতি ছিলো কালো বস্তু তাপ অন্য সব রঙের বস্তুর চেয়ে বেশি শোষণ করে, এবং আমরা এও জানি যে সূর্যের আলো আলোর সঙ্গে তাপও নিয়ে আসে। এই পরীক্ষায় আমরা সেই আলোকে আরও বাড়িয়ে তাকে কেন্দ্রীভূত করে কালো বস্তুর মাধ্যমে সর্বোচ্চ শোষণ ঘটিয়েছি ফলে খুব সহজেই কাগজটি তাপ শোষণ করে জ্বলে উঠেছে।
Read more ...

ডিলেট হয়ে যাওয়া ফাইল ফিরিয়ে আনার উপায়।


ভুল করে বা কোনো কারণে কম্পিউটার থেকে
ফাইলমুছে ফেলার পর ব্যাপারটা দ্রুত ধরতে পারলে
সাধারণত তথ্য উদ্ধার করার সম্ভাবনা বেশি থাকে।
মুছে যাওয়ার পরযতবারই হার্ডডিস্কে নতুন কোনো তথ্য লেখা বা ফাইলতৈরি হবে,
তথ্য উদ্ধারের সম্ভাবনাও তত কমতে থাকবে।
তাই কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফাইল যদি মুছেই যায়,
তাহলেকম্পিউটার একটু কম ব্যবহার করলে তথ্য উদ্ধার করাটা সহজহবে।
রিসাইকল বিন পরীক্ষা করুনউইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমচালিত কম্পিউটারগুলোতে
নিরাপদ ব্যবস্থা হিসেবে স্বাভাবিকভাবে মুছে যাওয়াফাইলগুলো রিসাইকল বিনে জমা রাখে।
ব্যবহারকারীপরবর্তী সময়ে প্রয়োজন মনে করলে সেখানথেকে
মুছে যাওয়া ফাইল সহজে উদ্ধার করতে পারেন।
তাই মুছে যাওয়া ফাইল উদ্ধার করতে চাইলে প্রথমেসেখানেই খোঁজ করুন।
ডেস্কটপে সাধারণত রিসাইকল বিনের একটি আইকন থাকে,
এটি খুলে যদি সেখানে প্রয়োজনীয় ফাইলটি পাওয়া যায়,
তাহলে তাতে ডান ক্লিক করে রিস্টোর অপশনে ক্লিককরুন।
যেখান থেকে ফাইলটি মুছে ফেলা হয়েছিল,
সেখানে আবার চলে আসবে।ব্যাকআপ ব্যবহারহার্ডড্রাইভ বা
ডকুমেন্ট লাইব্রেরি যদি নিয়মিতভাবে অন্যকোথাও ব্যাকআপ নেওয়ার ব্যবস্থা থাকে,
তাহলেসেখানে মুছে যাওয়া ফাইলের একটা কপি থাকতে পারে।
ব্যাকআপ যদি বহনযোগ্য হার্ডডিস্ক বা পেনড্রাইভেনেওয়া হয়ে থাকে,
তাহলে তথ্য উদ্ধারের জন্যসেটিও ভালো একটি উৎস।
তৃতীয় পক্ষের সফটওয়্যার ব্যবহারমুছে যাওয়া ফাইল যদি রিসাইকল বিনেও পাওয়া না যায়,
তাহলেওসেসব ফাইল হার্ডডিস্কে থাকতে পারে।
এসব তথ্যউদ্ধারের জন্য বিভিন্ন সফটওয়্যার রয়েছে।
RecuvaPortable তেমনই একটি সফটওয়্যার।
সহজ ব্যবহারবিধিরপাশাপাশি বহনযোগ্য এ সফটওয়্যারটি বিনা মূল্যেই পাওয়া যায়।
তাই সফটওয়্যারটি ইন্টারনেট থেকে নামিয়ে নিলেইহলো,
ইনস্টল করার প্রয়োজন পড়বে না। সবচেয়েভালো হয়,
অন্য কোনো কম্পিউটার থেকে এটিনামিয়ে আনজিপ করে
কোনো পেনড্রাইভে কপিকরলে।তারপর মুছে যাওয়া ফাইলের কম্পিউটারে
পেনড্রাইভটিপ্রবেশ করিয়ে সেখান থেকে সফটওয়্যারটি চালু করুন।
সফটওয়্যারটি ডাউনলোড করুন৷
Read more ...

কিভাবে আপনার এন্ড্রয়েড ফোনকে রুট করবেন।

App Name: Kingroot
এখন রুট করার জনপ্রিয় অ্যাপ হলো কিংরুট।
এটা মোবাইল দিয়েই করা যায়। PC লাগবে না।
 আমিও কিংরুট দিয়ে ফোন রুট করেছি।
এটা দিয়ে নিক্ষুত ভাবে রুট করা যায়। এবং খুব সহজেই রুট করা যায়।
তোহ্ তলুন শুরু করি।
** যা যা লক্ষ রাখবেন
১. মোবাইলে মিনিমাম ৩০-৩৫% এর উপরে চার্জ রাখবেন
২. ডাটা কানেকশন অন রাখবেন(3G)

 এখান থেকে কিংরুট Latest Verson 4.9.3 ডাউনলোড করে নিন তারপর ইন্সটল করুন।

।এবার settings > about phone> Build Number এ যান। সেখানে পর পর ৩ বার ক্লিক করুন। ক্লিক করার পর ডেভলাপার অপ্সন active হবে।এবার settings > Developer Optionsএটা on করুন। এবার USB Debugging mode এ ঠিক চিহ্ন দিন।
এবার kingroot এ যান। App open করার পর Get Now ক্লিক করুন।




এবার অপেক্ষা করুন ১০০% হলে হয়ে যাবে মোবাইল রুট।এবার ফোন রিবোট দিন।রুট হয়েছে কিনা root cheaker Pro app ডাউনলোড করুন তারপর চেক করুন।Root Cheaker app টি Play store থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
Read more ...

Sunday, June 5, 2016

আপনার এন্ড্রয়েডে বাংলা ফন্ট স্টাইল চেন্জ করুন আজীবনের জন্য।





আসসালামুআলাইকুম!
কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই আছেন।
তো যাই হোক।
আজকে আমি আপনাদের দেখাবো,কিভাবে এন্ড্রয়েডে বাংলা ফন্ট স্টাইল চেন্জ করতে হয়।
আপনাদের অনেকেরই হয়ত জানা আছে বাংলা ফন্ট সফটওয়্যার টি ইন্সটল দিয়ে ভেতর থেকে চয়েজ করে ইন্সটল করলেই হয়ে যায়। কিন্তু এতে দেখা যায় আপনার ফোনটিকে কোন কারনে ফ্লাশ মারলে,অথবা সফটওয়্যার টি আনইন্সটল করে ফেললে স্টাইলটি আগের মতই হয়ে যায়।
তো, আজ আমি আপনাদের অন্যভাবে দেখাব। যেন কোনভাবেও হারানোর ভয় না থাকে।
শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার ফোনকে রুট করেরে নিবেনন।
যাই হোক ধরে নিলাম আপনার ফোন রুট করা।

তো, চলুন শুরু করি!
 প্রথমে এখান থেকে  ফাইলটি ডাউনলোড করে Unzip করুন।

Direct Download 

1) step: প্রথমে ফাইলটি Extact করলে ২টি সফটওয়্যার পাবেন। 1) Bangla Font 2) Es File Explorer দুটিকে ইন্সটল কররুন।
2)step: তারপর এখানে দুইটি ফোলডার তৈরি করুন 1) Old Font2) New Font


3) step: এখন Es file explorer open করুন। বেশি কঠিন মনে হলে একটার পর একটা Picture গুলো দেখে যান। এবং সঠিক ভাবে কাজ করুন। নিচে দেখুন।

NEXT


Next


Next এখানে আপনার ফোনটি রুট করা থাকলে ES এর রুট পারমিশন চাইবে। Allow দিন।


 




এখানে নিচের 👎 ছবিটাতে খেয়াল করুন। আপনার ফোনে এতদিন যে স্টাইলটি ব্যাবহার করেছিলেন।
সেই ফন্টগুলো খোজার চেষ্টা করুন। সহজ করে খুজতে হলে কোন বাংলিশ লেখা ttf ফাইল গুলো mark করুন।
আমার ফোনে বাংলিশ লিখা ttf ফাইল হলো NotoSuns- BengaliUI নিচে দেখুন ৪টা Mark করা আছে। আপনার ফোনে কম অথবা বেশিও হতে পারে। যেমন ৩-৫ টি ও থাকতে পারে। তো যাই হোক সেগুলোকে Mark করে Copy করে "Old Font" ফোল্ডারে Past করুন। 👎পরের ছবিগুলো Follow করুন।

👎এখন "Bangla Font" সফটওয়্যার টি Open করুন।👎

এখানে দেখুন ১৭টা স্টাইল আছে। আপনি যে কোন একটা Choose করুন। কিন্তু "ইন্সটল" বাটনে Click করবে না।
যেটা Choose করবেন সেটার নাম মনে রাখবেন। আমি এখানে "সোলায়মান লিপি" Choose করলাম এবং নামটা মনে রাখলাম।👎
Choose করার পর ES File Explorer এ যান। তারপর ডাউনলোড ককরা Extract ফাইল থেকে যে ২টি সফটওয়্যার পেয়েছিলেন সেখান থেকে "Bangla Font" সফটওয়্যার কে Hold(কিছুক্ষন ধরে রাখুন) করে রাখুন। তারপর...............👎

এইখানে আপনার Choose করা নামটি পাবেন। আমি "সোলায়মান লিপি" Choose করেছিলাম। তাই সোলায়মান লিপি ফাইলটাকে Extract করবো।👎

নিচে দেখুন আমাদের তৈরি করা ২টি ফোল্ডারের পাশে নতুন "Bangla Font" ফোল্ডার এসেছে। ফোল্ডারটি Open করুন।👎
নিচে দেখুন। সেই Extract করা "সোলায়মান লিপি(SoaimabLipi.ttf)" ফইলটি। এখন একে রিনেম চেন্জ করে করে ৪বার "New Font" ফোল্ডারে Copy-Past করবো।
এখানে ৪টা নেয়ার কারন হলো আমার এখানে ৪টি Old Font আছে। আপনার এখানে যতটা থাকবে ততটাই Copy-Past করবেন।👎

নিচে দেখুন আমিরে রিনেম চেন্জ করে করে ৪বার Copy করেছি।
অর্থাৎ একটাকে ৪টা বানাবেন। আপনার Old Font ৫টি হলে ৫টিই বানাবেন।👎


এখন নিচে 👎 খেয়াল কররুন। "Old Font" ফোল্ডারে এ যে চারটি ttf ফাইল আছে সেই ৪টি ফাইলের নাম একটি একটি করে Copy করে "New Font" ফোল্ডারের সবকটি ফাইলের নামে বসিয়ে দিন। সুবিধার্থে!  নিচের ছবিটি খেয়াল ককরুন।👎
নিচে দেখুন। "New Font" ফোল্ডার এর সবকটি (৪টি) ফাইল Copy করুন।আর নিচের ছবিগুলোকে Follow করে এগিয়ে যান।👎

নিচে 👎 দেখুন। Copy করা ফাইলগুলো এখানে Past করুন। দারান! নিচের ছবিগুলো দেকে Overwrite করুন।
নিচে দেখুন👎। এখন আমাদের আসল কাজ। যে চারটি ফাইল এখানে Overwrite করেছেন সেগুলোকে একটি একটি করে Permision করতে হবে। প্রথমটিকে চেপে ধরুন। তারপর............👎



সবগুলো Permision করা হয়েগেলে কাজ শেষ।
এখন আপনার ফোনটিকে একবার Restart/Reboot করুন। হয়ে গেল চেন্জ আপনার বাংলা ফন্ট স্টাইল। ৃNote টা চালু করে বংলা লিখে Test করুন। 


কষ্ট করে পড়ার জন্য ধন্যবাদ।(আপনি তো শুধু পরেছেন। আর আমি তৈরি করেছি)


পারলে এরচেও তাড়াতাড়ি ভিডিও টিওটোরিয়াল দেখে করতে পাররেন।
এখানে আমারই তৈরি করা ভিডিও টিওটোরিয়ালটি পাবেন। নিচে দেখুন।

Read more ...